মূর্তি ভাঙা নয়, শত্রুর বিরুদ্ধে শক্তি ও কৌশল গড়া উচিত: মাহফুজের পরামর্শ

মাহফুজ আলমের বক্তব্যে ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপের পথে ভাঙার চেয়ে গড়ার গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। তিনি আঞ্চলিক আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে দূরদর্শী পদক্ষেপ, রাষ্ট্রকল্পনা, শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান এবং দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা উপর জোর দেন। এছাড়াও, সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব বাস্তবায়ন এবং জুলাই গণহত্যার বিচারের প্রসঙ্গ আলোচনা করা হয়েছে। ভবিষ্যতের জন্য গড়ার প্রকল্পগুলো দ্রুত শুরু করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

 0
মূর্তি ভাঙা নয়, শত্রুর বিরুদ্ধে শক্তি ও কৌশল গড়া উচিত: মাহফুজের পরামর্শ
মূর্তি ভাঙা নয়, শত্রুর বিরুদ্ধে শক্তি ও কৌশল গড়া উচিত: মাহফুজের পরামর্শ

ফ্যাসিবাদী ব্যবস্থার বিলোপ শুধু ভাঙার কাজ নয়, বরং এর বিকল্প গড়ারও লড়াই। এই মর্মে উপদেষ্টা মাহফুজ আলম তাঁর ভেরিফায়েড ফেসবুক পোস্টে গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিয়েছেন। বুধবার (৫ ফেব্রুয়ারি) দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে তিনি ‘গড়ার তাকত আছে আমাদের?’ শিরোনামে একটি পোস্টে এই বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন। মাহফুজ আলম বলেন, আমরা আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই করছি। এটি শুধু কিছু মূর্তি বা দালান ভাঙার ব্যাপার নয়। মূর্তি ভাঙার চেয়ে আমাদের উচিত শত্রুর শক্তির বিরুদ্ধে পাল্টা চিন্তা, শক্তি ও কৌশলগত পদক্ষেপ গড়ে তোলা। ভাঙার প্রকল্প থেকে সরে এসে দিনকে দিন গড়ার প্রকল্প হাতে নেওয়া উচিত। তিনি আরও বলেন, লীগ বা শেখ হাসিনা নিজে কিছুই নয়, বরং তারা আঞ্চলিক আধিপত্যবাদের এক্সটেনশন। আঞ্চলিক আধিপত্যবাদ তার হেজেমনি তৈরি করছে বাস্তবধর্মী রাষ্ট্রকল্পনা, দেশে এবং ডায়াসপোরায় দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি এবং রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানগুলো শক্তিশালী করে। আমাদের পাল্টা হেজেমনিও এই তিনটি বিষয়ের ওপর নির্ভরশীল। ভাঙার পর গড়ার সুযোগ এসেছে, কিন্তু অনন্ত ভাঙা প্রকল্প আমাদের জন্য ভালো ভবিষ্যতের ইঙ্গিতবহ নয়। গড়ার প্রকল্পগুলো খুব দ্রুতই শুরু ও বাস্তবায়ন হবে। আপনারা গড়ার কাজে সক্রিয় হোন। সংস্কার কমিশনের প্রস্তাব বাস্তবায়নের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, সংস্কার কমিশনের প্রস্তাবনাগুলো বাস্তবায়ন শিগগিরই শুরু হবে। আহত ও নিহতদের পরিবারের পুনর্বাসন ও জুলাই গণহত্যার বিচারের কাজও চলমান। এ মাসেই এ কাজগুলো আরও গতি পাবে। তিনি বলেন, আমাদের উচিত সৃজনশীল শক্তির বিকাশ ঘটানো এবং সার্বিকভাবে এই আধিপত্যবাদ মোকাবেলায় দূরদর্শী পদ্ধতি গ্রহণ করা। কারণ, এই লড়াই মাত্র শুরু হয়েছে। অন্তত এক দশক পরে এই লড়াইয়ের একটা মিমাংসা হবে। অথচ সেজন্য আমাদের প্রস্তুতি এখনো সামান্য। মাহফুজ আলম বলেন, অভ্যুত্থানের পর আমাদের রাগ, ক্ষোভ ও ঘৃণাকে ইতিবাচক শক্তিতে রূপান্তরের সুযোগ তৈরি হয়েছিল। এখনও সেই সুযোগ হারায়নি। আগামী অন্তত এক দশকব্যাপী দীর্ঘ গণতান্ত্রিক ও আধিপত্যবাদবিরোধী লড়াইয়ের জন্য আমাদের সৃজনশীল শক্তিকে কাজে লাগানো দরকার। ভবিষ্যৎ পানে তাকান, ইতিহাস আমাদের সুযোগ দিয়েছে। এবার জিততেই হবে, আর জেতার উপায় একটাই—রাষ্ট্রকল্প, শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান এবং দক্ষ ও মর্যাদাবান মানবসম্পদ গড়ে তোলা। আল্লাহ আমাদের ফেরাসত তথা দূরদৃষ্টি দান করুন।

What's Your Reaction?

like

dislike

love

funny

angry

sad

wow