সৎ মানুষের সঙ্গে থাকার সুফল
মানুষ যার সঙ্গে থাকে তার স্বভাব ধারণ করে। একটি প্রসিদ্ধ প্রবাদ হচ্ছে-‘সৎসঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎসঙ্গে সর্বনাশ’। অনেক সময় কেবল সৎ লোকদের সঙ্গে থাকার কারণেই অর্জিত হয় অনেক বড় সওয়াব ও পুরস্কার। পবিত্র কুরআনে এ মর্মে নির্দেশনাও প্রদান করা হয়েছে।

মানুষ যার সঙ্গে থাকে তার স্বভাব ধারণ করে। একটি প্রসিদ্ধ প্রবাদ হচ্ছে-‘সৎসঙ্গে স্বর্গবাস, অসৎসঙ্গে সর্বনাশ’। অনেক সময় কেবল সৎ লোকদের সঙ্গে থাকার কারণেই অর্জিত হয় অনেক বড় সওয়াব ও পুরস্কার। পবিত্র কুরআনে এ মর্মে নির্দেশনাও প্রদান করা হয়েছে।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো এবং সত্যবাদীদের অন্তর্ভুক্ত হও’ (সুরা তাওবা : ১১৯)। নেককার বান্দাদের সঙ্গে থাকা, তাদের সান্নিধ্য গ্রহণ করা, তাদের মজলিসে বসা ইত্যাদিও স্বতন্ত্র ফজিলতের বিষয়। এ প্রসঙ্গে হাদিসে চমকপ্রদ একটি সংলাপ বর্ণিত হয়েছে।
হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে-আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহর পক্ষ থেকে নিযুক্ত কিছু ফেরেশতা আছেন যারা জমিনে আল্লাহর কথা স্মরণকারীদের সন্ধানে রাস্তায় রাস্তায় পরিভ্রমণ করতে থাকেন। যখন কোনো দলকে আল্লাহর জিকির ও আলোচনায় মশগুল দেখতে পান তখন তারা একে অন্যকে এভাবে আহ্বান করেন-তোমাদের কাক্সিক্ষত লক্ষ্যের দিকে আসো! বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর তাদের নিজেদের ডানা দ্বারা দুনিয়ার আসমান পর্যন্ত ঢেকে নেন।
বর্ণনাকারী বলেন, অতঃপর আল্লাহ তায়ালা ফেরেশতাদের তাদের সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেন; অথচ তিনি তাদের চেয়ে অধিক জানেন-আমার এই বান্দারা কী বলে? ফেরেশতারা বলেন, তারা আপনার পবিত্রতা বর্ণনা করছে, আপনার বড়ত্ব ঘোষণা করছে, আপনার প্রশংসা করছে ও আপনার মর্যাদা ঘোষণা করছে। অতঃপর আল্লাহ বলেন, তারা কি আমাকে দেখেছে? ফেরেশতারা বলেন-না, আল্লাহর কসম তারা আপনাকে দেখেনি।
অতঃপর আল্লাহ বলেন, যদি তারা আমাকে দেখত কেমন হতো? ফেরেশতারা বলেন, যদি তারা আপনাকে দেখত তা হলে আরও কঠিন ইবাদত করত, অধিক মর্যাদা ও প্রশংসার ঘোষণা করত, অধিক তাসবিহ পাঠ করত।
আল্লাহ বলেন, তারা আমার কাছে কী চায়? ফেরেশতারা বলেন, তারা আপনার কাছে জান্নাত চায়। আল্লাহ বলেন, তারা কি জান্নাত দেখেছে? ফেরেশতারা বলেন-না, হে রব তারা জান্নাত দেখেনি। আল্লাহ বলেন, যদি তারা জান্নাত দেখত কেমন হতো? ফেরেশতারা বলেন, যদি তারা জান্নাত দেখত তা হলে তার জন্য তারা আরও অধিক আগ্রহী হতো, অধিক অনুসন্ধানকারী হতো এবং তারা অধিক আশা পোষণ করত। আল্লাহ বলেন, তারা কী থেকে আশ্রয় চায়?
ফেরেশতারা বলেন, জাহান্নাম থেকে। আল্লাহ বলেন, তারা কি জাহান্নাম দেখেছে? ফেরেশতারা বলেন-না, আল্লাহর কসম, হে রব তারা জাহান্নাম দেখেনি। আল্লাহ বলেন, যদি তারা জাহান্নাম দেখত কেমন হতো? ফেরেশতারা বলেন, যদি তারা জাহান্নাম দেখত তা হলে তার থেকে অধিক পলায়ন করত, তাকে অধিক ভয় করত। আল্লাহ বলেন, তোমাদের সাক্ষী রাখছি, আমি তাদের ক্ষমা করে দিলাম।
তখন এক ফেরেশতা বলেন, হে আল্লাহ! তাদের মধ্যে তো অমুক রয়েছে যে তাদের দলভুক্ত নয় বরং সে অন্য কোনো কাজে এখানে এসেছে এবং তাদের সঙ্গী হয়েছে! তখন আল্লাহ তায়ালা বলেন, তারা এমন দল, যাদের কারণে তাদের সান্নিধ্যে আসা ব্যক্তিরাও বঞ্চিত হয় না’ (বুখারি : ৬৪০৮)। কেবল নেককারদের সঙ্গে থাকার কারণেও কিছু মানুষ নেককারদের জন্য বরাদ্দ সওয়াব ও প্রতিদানের অংশীদার হয়ে গেল। আল্লাহ তায়ালা আমাদের নেককার হওয়ার এবং নেককারদের সান্নিধ্য অর্জনের তওফিক দান করুন।
What's Your Reaction?






